আন্ত’র্জাতিক সকলপ্রকার ক্রিকেট থেকে অবসরের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন অধিনায়ক তামিম ইকবাল। আফগানি স্তানের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজের প্রথম ম্যাচ খেলেই বৃহস্পতিবার (০৬ জুলাই) এমন ঘোষণা দেন বাংলাদেশ এই অধিনায়ক।
‘তামিম ইকবালের এমন বিদায়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে সামা’জিক যোগাযোগমাধ্যমে। অনেকেই তার এমন সিদ্ধান্ত মেনে নিতে পার’ছেন না। তবে, তামিমের সিদ্ধান্তকে সম্মান জানিয়ে নিজের ভেরি’ফায়েড ফেসবুক পেজে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক ও সংসদ সদস্য মাশরাফি বিন মর্তুজা। ‘মাশরাফি লেখেন,
‘তামিম, তোর সিদ্ধান্ত অবশ্যই একা ন্তই তোর। এটা কারও ভালো লাগলেও তোর, ভালো না লাগলেও তোর। পক্ষে-বিপ ক্ষে অনেক কথাই হবে। তবে সবচেয়ে ভালো কোনটা, সেটা তুই ছাড়া কেউই ভালো বুঝবে না। তাই তোর এই সিদ্ধা’ন্তকে আমি ব্যক্তিগতভাবে শতভাগ সম্মান জানাই। তবে কিছু কথা জানতে মন চায়, মাত্র ৩৪ বছর ১০৮ দিনেই বিদায় কেন! আ’সলেই কি চালিয়ে যেতে পারছিস না? নাকি কোনো চাপ তোকে বাধ্য করেছে! তোর অনেক ভক্ত হয়তো খুঁজে ফিরবে এই প্রশ্নগুলোর উত্তর। আজ খুঁজ’বে, এমনকি ভবিষ্যতেও আরও অনেক দিন খুঁজবে।’
দীর্ঘ ৮ বছর পর খুলে দেয়া হলো যু”ক্তরাজ্যের বৃহত্তম মসজিদ বা’য়তুল ফুতুহ
এছাড়া তামি’মের সঙ্গে প্রথম পরিচয়ের কথা তুলে ধরে মাশরাফি বলেন, ‘তোকে প্রথম দেখেছি চট্টগ্রা’মে তোদের বাসায়, হাফ প্যান্ট পরে খেলছিলি। তোর ভাই, আমার বন্ধু নাফিস ইক’বাল তোকে আ’মার সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিল। পরেরবার দেখলাম জাতীয় লীগে ওপেন করতে, খুলনার মাঠে। তারপর ২০০৭ বিশ্বকাপ থেকে একসঙ্গে পথ চলতে চলতে তুই হয়ে গেলি বন্ধুর মতো। কত দিন কত রাত এক সঙ্গে সময় কা’টিয়েছি, একসঙ্গে খেতে যাওয়া, ঘণ্টার পর ঘণ্টা আড্ডা, দুষ্টুমি, মজা, তর্ক, খেলা নিয়ে কত কত আ’লোচনা করেছি, সেসবের কোনো হদিস নেই।’
অতীত স্মৃ’তির কথা মনে করে সাবেক অধিনায়ক বলেন, “যখন বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের অধি’নায়ক ছিলাম, তখন তুই ছিলি আমার অন্য’তম ‘স্নাইপার।’ সেটা তুই নিজেও খুব ভালো করেই জানিস। যেদিন দল থেকে বের হয়ে এলাম, সেদিন তুই আমাকে কাঁধে তুলে নিয়েছিলি। পরে সারা রাত একসঙ্গে আড্ডা দিয়েছিলাম। যে কোনো সিরি’জ বা সফরে তুই ছিলি আমার রুমে আড্ডার অবধা’রিত সঙ্গী। আরও কত শত স্মৃতি এখন মনে পড়ছে!”
তাছাড়া তামি’মের উদ্দেশে তিনি আরও বলেন, ‘তোকে যতটুকু চিনি, তাতে তোর এই সিদ্ধা’ন্তকে আমি অনা’য়াসে পোস্টম’র্টেম করতে পারতাম। কিন্তু তা করব না, কারণ ওই যে, তোর নিজস্ব সিদ্ধান্তকে অবশ্যই সম্মান জানানো উচিত। তোর মানসিক অবস্থা আমি বুঝতে পারছি, সেই সঙ্গে এটাও বলছি যে, তুই বাংলাদেশের ক্রিকে’টকে যা কিছু দিয়েছিস, তা আমরা আজীবন মনে রাখব। একজন তামিম হয়ে উঠতে কতটা পরিশ্রম, কতটা সময়, কতটা মেধা আর কত ত্যাগ থাকতে হয়, তা সময় সব কিছু বুঝি’য়ে দেবে। তোর প্রতি রইল অফুর”ন্ত ভালোবাসা। পরব’র্তী জীবন পরিবার নিয়ে দারুণ কাটাবি, সেই আশাই করছি।’
তামি’মকে বিদায় জানিয়ে মাশরা’ফি বলেন, ‘আর একটা কথা, দলের ভেতর নানা পরিসংখ্যান নিয়ে বিশ্লেষণ নির্ভর আলোচনা এখন কে করবে, ঠিক জানি না। হয়তো কেউ করবে। তবে তুই এই জায়গায় সবসময়ই থাকবি সেরাদের সেরা। গুড বাই মি. তামিম ইকবাল খান। একজন কিংবদন্তির বিদায়। বাংলাদেশ ক্রিকেটের জন্য শুভ কামনা, এগিয়ে চলুক দুর্বার গতিতে। আমাদের এখন সামনে এগিয়ে যাওয়ার সময়।’
১৬ বছর ধরে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নিয়’মিত মুখ তামিম। দলের অন্যতম সেরা ওপে’নারও তিনি। তবে সাম্প্রতিক সময়ে চোট ও ফিট’নেস নিয়ে ভালোই ভুগতে হচ্ছিল বাঁহাতি এই ওপে’নারকে। বিভিন্ন সিরিজের আগে ছিটকে যাওয়া কিংবা পারফ’রম্যান্স তলা’নিতে পৌঁছানো মিলিয়ে সময়টা ভালো যাচ্ছিল না তার।
চোট থাকার পরও আফগানি’স্তানের বিপক্ষে খেলার সিদ্ধান্ত নেওয়ায় কোচ ও বিসিবি সভা’পতির অসন্তো’ষের কারণও হন তিনি। এসব নিতে না পেরেই নাকি এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তামিম